সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এমনকি থানায় কোন মামলাও হয়নি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসক সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন। পার্কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মগত মঙ্গলবার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পার্কের গেটসহ বাইরে ও ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে দূর্বৃত্তরা।
অন্যদিকে হামলা পরবর্তীতে গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পার্কে দর্শনার্থীর সমাগম একেবারেই কমে যায়। তবে দুপুর পেরিয়ে বিকেল হতেই ধীরে ধীরে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ পার্কের নিয়মিত সব আয়োজন স্থগিত করেন জেলা প্রশাসন।
গতকাল ডিসি পার্কে গিয়ে দেখা গেল, পার্কের ভেতরে ভাঙচুর হওয়া জিনিসপত্র সকাল থেকে কর্মচারীরা সরিয়ে নিচ্ছে। পার্কের ভেতরে চলা ফুল উৎসব যাতে ব্যাহত না হয়, সেই চেষ্টায় রয়েছেন পার্ক কর্তৃপক্ষ। পার্কের বাইরে দেওয়া অস্থায়ী ফটক, টিকিট কাউন্টার, ব্যানার-ফেস্টুন, ছবি তোলার জন্য নির্মিত ‘সেলফি স্ট্যান্ড’ এবং পার্কের ভেতরে তিনটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। ভেঙে ফেলা হয়েছে পার্কের দেড় শতাধিক ফুলের টব। ভাঙচুর করা এসব জিনিসপত্র সরাতে ব্যস্ত পার্কের কর্মীরা।
পার্ক এলাকায় জোরদার করা হয়েছে পুলিশের টহল।
দুপুর ১২টার দিকে ফুল উৎসবের জন্য পার্কে ঢুকতে হাটহাজারী থেকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনটি বাস পার্কের সামনে আসে। তবে ভাঙচুর করা জিনিসপত্র তখনো অপসারণ না হওয়ায় তাদের গেটের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
পার্কটির সিকিউরিটি ইনচার্জ গোলাম রসুল বলেন, সকাল থেকে পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে। সব ঘুছানো শেষ হলে পার্কে দর্শনার্থীদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, পার্কসংলগ্ন রাস্তায় লরি রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চালক ও পার্কের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে পার্কে হামলার ঘটনা ঘটান চালকেরা। তিনি আরও বলেন, হামলার ঘণ্টা দু-এক পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হামলার ঘটনার কারণে গতকাল বুধবার পার্কে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সবকিছু স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন,ডিসি পার্কে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত পূর্বক ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ডিসি পার্কের পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
গত ৪ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী ফুল উৎসব চলছে ডিসি পার্কে। আজ বুধবার ফুল উৎসব সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। তবে উৎসব পয়লা ফাল্গুন, অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এই ফুল উৎসব উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ‘গালা নাইট কনসার্ট’–এর আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। সেখানে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জেমস গান করার কথা রয়েছে।
Comments are closed.